পর্যটন ডেস্ক:
আগামী ১লা নভেম্বর থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
গত বছর করোনা মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে টানা ১৯ মাস ধরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই সময়ের মধ্যে কোনো নাগরিক দেশের বাইরে ভ্রমণে যেতে চাইলে প্রয়োজন হতো অনুমতির। নভেম্বর মাস থেকে এই অনুমতির আর প্রয়োজন পড়বে না।
বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আগামী পয়লা নভেম্বর থেকে দেশের বাইরে ভ্রমণের জন্য অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের আলাদা করে আর কোনো অনুমতি নিতে হবে না। অবশ্য করোনা প্রতিরোধী টিকার ডোজ সম্পন্ন করা ব্যক্তিরাই সুবিধাটি পাবেন।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার জানিয়েছে, বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যে ছাড় দেওয়া হয়েছে তা আপাতত অস্ট্রেলীয় নাগরিকরাই উপভোগ করতে পারবেন। বিদেশিদের ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারেন অ্যানড্রুজ বলেন, চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করেছেন এমন দক্ষ শ্রমিক ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আমরা স্বাগত জানাতে পারব বলে আশা করছি।
এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নাগরিকদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেয়ার সময় এসেছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি যে দুই রাজ্যে বাস করে সেই নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়া পয়লা নভেম্বর থেকে টিকার ডোজ সম্পন্ন করা সব আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীকে কোয়ারেন্টিন ছাড়াই সেখানে স্বাগত জানাবে। তবে এক্ষেত্রে নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দারা প্রথম সুযোগ পাবেন।
টিকার ডোজ সম্পন্ন করা সব নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দারা এদিন থেকে ভ্রমণ অব্যাহতি চাওয়া ছাড়াই বিদেশ যেতে পারবেন।
২৩ নভেম্বর থেকে সাউথ অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় অর্ধেকে নামিয়ে এনে সাত দিন করবে। রাজ্যটির ১২ বছরের বেশি বয়সী জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের টিকার দুই ডোজ দেওয়া সম্পন্ন হওয়ার পর কোয়ারেন্টিনের এ নিয়ম তুলে নেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হয়নি।
এদিন থেকে নর্দান টেরিটরি সম্পূর্ণ টিকা দেওয়া অভ্যন্তরীণ ভ্রমণকারী যারা ভাইরাস হটস্পট থেকে আসবেন তাদের দুই সপ্তাহের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুমোদন দেবে।
পয়লা ডিসেম্বর থেকে সিডনিসহ পুরো নিউ সাউথ ওয়েলসে টিকা নেননি এমন বাসিন্দারাও টিকা গ্রহীতাদের সমান স্বাধীনতা উপভোগ করবেন। বাড়িতে অথবা বাইরে জমায়েতের বিষয়ে বেঁধে দেওয়া কোনো সীমা আর থাকবে না। খুচরা পণ্যের দোকানগুলোতেও আরও বেশি ক্রেতা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
১৫ই ডিসেম্বর থেকে টিকার ডোজ সম্পন্ন করা বিদেশি ভ্রমণকারীদের এবং ভ্রমণের আগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ জমা দেওয়া অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেবে তাসমানিয়া।
১৭ই ডিসেম্বর থেকে কুইন্সল্যান্ড দেশের সব রাজ্যের টিকা নেওয়া বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টিন ছাড়াই সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেবে, তবে বিদেশি ভ্রমণকারীদের ‘একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত’ হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
২০শে ডিসেম্বর থেকে নর্দান টেরিটরি কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় অর্ধেক করে এক সপ্তাহে নামিয়ে আনবে। আর ১৮ই জানুয়ারি, ২০২২ থেকে কোয়ারেন্টিন পুরোপুরি তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
একমাত্র ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া রাজ্য তাদের সীমান্ত খোলার কোনো পরিকল্পনা এখনও গ্রহণ করেনি। তারা অন্যান্য রাজ্যগুলোকে সতর্ক করে বলেছে, যদি ওই রাজ্যগুলো ভাইরাস আক্রান্ত নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়ার বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টিন ছাড়াই তাদের রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেয় তাহলে তাদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেবে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া।
সেরা টিভি/আকিব