অনলাইন ডেস্ক:
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদোগে তৈরি নভেল করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্বে তৃতীয় ভ্যাকসিন হিসেবে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন শেষ ধাপের পরীক্ষায় পৌঁছাল।
সোমবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, তারা করোনাভাইরাসের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্রে শুরু করেছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের তহবিলের জোগান দিয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৩০ হাজার অংশগ্রহণকারীর ওপর এই ট্রায়াল চালানো হবে।
বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন করোনায় সংক্রমণ এবং মৃত্যু বাড়লেও এই রোগ নির্মূলে এখন পর্যন্ত রাশিয়া ছাড়া আর কেউ কার্যকর ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের ঘোষণা দিতে পারেনি। তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের আগেই রুশ টিকাটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ায় এর কার্যকারিতার ব্যাপারে সন্দিহান পশ্চিমা বিশ্ব। রাশিয়ার কথা বাদ দিলে ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে শীর্ষে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইডিশ ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগটি। ভ্যাকসিনটির দুই ধাপের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এখন বিভিন্ন দেশে চলছে তৃতীয় পর্যায়। অ্যাস্ট্রাজেনেকার পরীক্ষামূলক টিকাটির নাম এজেডডি১২২২। মার্কিন সরকারের অপারেশন ওয়ার্প স্পিড কর্মসূচির আওতায় সেখানে টিকাটির শেষ ধাপের ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনার টিকা তৈরি, উৎপাদন ও বণ্টন দ্রুত করতে অপারেশন ওয়ার্প স্পিড চালু করেছে মার্কিন সরকার।
রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে চার সপ্তাহের ব্যবধানে দুই ডোজ করে টিকা বা একটি প্লাসেবো দেওয়া হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই করোনা ভাইরাসের টিকা পেতে পারেন মার্কিনিরা। যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগামী বছরের আগে কোনো কার্যকরী টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, আগামী অক্টোবরে শেষ ধাপের ট্রায়ালের উপাত্ত পেতে পারে তারা। একই কথা জানিয়েছে, পিফাইজার ইনকরপোরেশন ও বায়নটেক এসই। তেমনটা হলে উপাত্তের বিশ্লেষণ শেষে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বৃটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় এজেডডি১২২২ নামের টিকাটির শেষ ধাপের ট্রায়াল আগে থেকেই চলছে। এর পাশাপাশি জাপান ও রাশিয়ায়ও টিকাটির ট্রায়াল চালুর কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ হাজার অংশগ্রহণকারীর ওপর টিকাটির ট্রায়াল পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটস অব হেলথ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শেষ ধাপের ট্রায়ালে দেখা হবে, টিকাটি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পারে কিনা বা রোগটি গুরুতর হওয়া রুখতে পারে কিনা।
সেরা নিউজ/আকিব